Friday, February 1, 2013

Herbal Tulsi Info

তুলসী পাতার গুনাগুন

[[ আমাদের চারপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা ভেষজ উদ্ভিদের মাঝে তুলসী গাছের নামটা বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। অনেকের ধারণা শুধুমাত্র পূজা-অর্চনাতেই তুলসী পাতার ব্যবহার হয়ে থাকে, তবে ব্যাপার আসলে তা নয়। আয়ুর্বেদেও তুলসী পাতাকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন স্থান দেয়া হয়েছে। তুলসী পাতার মহা গুনী এই রুপটাকে তুলে ধরতেই আজকের পোষ্ট। আসুন আরেকটু সমৃদ্ধ করি নিজের জানার পরিধি...]]

তুলসী পরিচিতিঃ
নামঃ
বাংলাঃ তুলসী
বৈজ্ঞানিক নামঃ Ocimum sanctum
গোত্রঃ Lamiaceae
holy basil
পরিচিতিঃ
সাধারনত ভেজা মাটিতে তুলসী গাছের জন্ম হয়ে থাকে । তুলসী ঔষধি ও চিরহরিৎ গুল্মজাতীয় গাছ। পূর্ণাঙ্গ উদ্ভিদ ৭৫-৯০ সে.মি. হয়। শাখা-প্রশাখা শক্ত ও চতুষ্কোনাকার। পাতা ২ থেকে ৪ ইঞ্চি পর্যন্ত লম্বা হয়ে থাকে। তবে এর পাতার কিনারা খাঁজকাটা। তুলসী গাছের ফুল, ফল এবং পাতার একটি ঝাঁজালো গন্ধ আছে। বাংলাদেশ ও ভারতের সর্বত্র এ গাছ দেখতে পাওয়া যায়। এ গাছের গুণাগুণের কথা বিভিন্ন প্রাচীন গ্রন্থেও উল্লেখ আছে।

তুলসী মূলত সবুজ রঙের গুল্মজাতীয় উদ্ভিদ। তুলসীগাছের পাতা, বীজ, ডালপালা সবকিছুই মানুষের উপকারে লাগে। আশেপাশে খুব সহজলভ্য এই উদ্ভিদের সদ্ব্যবহার করতে পারলে রেহাই পেতে পারি অসংখ্য সমস্যা থেকে। চলুন দেখে নেই তুলসী পাতা আমাদের কি ধরনের সুবিধা দিয়ে থাকে…


  • চর্মরোগে তুলসী পাতা দূর্বাঘাসের ডগার সঙ্গে বেটে আক্রান্ত স্থলে মাখলে ভালো হয়ে যায়।
  • তুলসী পাতা গরম পানিতে সেদ্ধ করে সেই পানিতে গড়গড়া করলে মুখ ও গলার রোগজীবাণু মরে যায়।
  • জ্বর হলে পানির মধ্যে তুলসী পাতা, গোল মরিচ এবং মিশ্রী মিশিয়ে ভাল করে সেদ্ধ করে নিন ৷ অথবা উপরিউক্ত তিনটে দ্রব্য মিশিয়ে বড়ি তৈরি করুন ৷ দিনের মধ্যে তিন-চার বার ঐ বড়িটা পানি দিয়ে সেবন করুণ । ইনশা আল্লাহ, জ্বর খুব তাড়াতাড়ি সেরে যাবে।


  • তুলসী পাতা কয়েক ফোঁটা মধু বা লেবুর রস মিশিয়ে চিবিয়ে খেলে ফুসফুস, কণ্ঠনালি, দাঁতের গোড়া, মাড়ি ভালো থাকে।
  • তুলসী পাতার রস পেট ব্যথা, পেটের বা পাকস্থলীর রোগজীবাণুকে দূর করে, রক্ত পরিষ্কার করে এবং তারুণ্য ধরে রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
  • কাশি হলে তুলসী পাতা এবং আদা একসাথে পিষে মধুর সঙ্গে মিশিয়ে খান ৷ এতে উপকার পাবেন ৷

  • ডাইরিয়া হলে ১০ থেকে ১২ টি পাতা পিষে রস খেয়ে ফেলুন।
  • মুখের দুর্গন্ধ দূর করতে দিনে ৪-৫ বার তুলসী পাতা চাবান। দুর্গন্ধ চলে যাবে।
  • ম্যালেরিয়া জ্বরে তুলসী পাতা খেলে জ্বর দ্রুত ভালো হয়।
  • ত্বকের লাবণ্য রক্ষার্থে, অ্যাসিডিটি, কোষ্ঠকাঠিন্য, ক্ষুধামান্দ্য, বদহজম দূর করতে তুলসী পাতার ভূমিকা অপরিহার্য।


  • আপনার শরীরে যদি কোনরকম ঘা যদি থাকে তাহলে তাহলে তুলসী পাতা এবং ফিটকিরি একসঙ্গে পিষে ঘা এর স্থানে লাগান।
  • শরীরের কোন অংশ যদি পুড়ে যায় তাহলে তুলসীর রস এবং নারকেলের তেল লাগান, এতে জ্বালাপোড়া কমে যাবে। পোড়া জায়গাটা তাড়াতাড়ি শুকিয়ে যাবে এবং পোড়া দাগ ওঠে যাবে।
  • তুলসী চা শারীরিক ও মানসিক অবসাদ দূর করে, মস্তিষ্কে অক্সিজেনের সরবরাহ বাড়িয়ে দেয়। ফলে মানুষের কর্মক্ষমতা বেড়ে যায়, রোগ-প্রতিরোধশক্তি দ্বিগুণ হয়।

  • উচ্চ রক্তচাপ ও কোলেস্টেরল কমিয়ে হূৎপিণ্ডের রক্ত সরবরাহের মাত্রা ঠিক রাখতে সাহায্য করে। লিভারের কার্যক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়।
  • হাড়ের গাঁথুনিতে ব্যথা দূর করে এবং শরীরের কাটাছেঁড়া দ্রুত শুকাতে অবদান রাখে। তুলসীগাছের বীজও যথেষ্ট দরকারি।
  • তুলসীর বীজ শুকিয়ে মিহি করে খেলে প্রস্রাবের ইনফেকশনজনিত সমস্যা ভালো হয়, জননতন্ত্রের অসুবিধা দূর হয়।


  • পুরুষত্বহীনতা দূরীকরণে এই পাতার অবদান রয়েছে।
  • ত্বকের রোশনি বাড়ানোর জন্য, ত্বকের বলীরেখা এবং ব্রন দূর করার জন্য তুলসী পাতা পিষে মুখে লাগাতে পারেন।
  • প্রস্রাবের জ্বালাপোড়া দূর করতে হলে তুলসী পাতার রস ২৫০ গ্রাম দুধ এবং ১৫০ গ্রাম জলের মধ্যে মিশিয়ে পান করুন।
  • ঠান্ডা মৌসুমে ছোট বাচ্চাদের তুলসী পাতা খাওয়ালে কৃমি দূর হবে এবং মাংসপেশি ও হাড় হবে শক্তিশালী।

  • যদি কখনও বমি কিংবা মাথা ঘোরা শুরু করে, তাহলে তুলসী রসের মধ্যে গোলমরিচ মিশিয়ে খেলে বিশেষ উপকার পাওয়া যায়।
  • সকালবেলা খালি পেটে তুলসী পাতা চিবিয়ে রস পান করলে খাবারের রুচি বাড়ে।
  • নিয়মিত তুলসীর রস পানে হৃদরোগেও উপকার পাওয়া যায়।
  • চোখের সমস্যা দূর করতে রাতে কয়েকটি তুলসী পাতা পানিতে ভিজিয়ে রেখে ওই পানি দিয়ে সকালে চোখ ধুয়ে ফেলুন।


  • বহুবিধ ব্যবহারের জন্য তুলসী পাতাকে বলা হয় ‘কুইন অব হার্ব’ বা ওষধি গাছের রানি। এই ওষধি পাতা শুধু শীতকাল নয়, ১২ মাসই ব্যবহারের উপযোগী।
  • তুলসীগাছের বাতাসও যথেষ্ট উপকারী। তাই সম্ভব হলে বাসার ব্যালকনিতে বা ফুলের টবে অন্তত একটি তুলসীগাছ লাগাতে পারেন। এতে পূরন হবে আপনার ভেষজ চাহিদা বাড়বে সৌন্দর্য্যও।



http://ajker24.com/permalink/3680.html



ডায়াবেটিকস চিকিৎসায় তুলসি পাতার অবদান
(আজকের ২৪) আদিকাল থেকেই মানুষ অসুখে-বিসুখে প্রাকৃতিক উপাদান বিশেষভাবে ভেষজ পদার্থ ব্যবহার করে আসছে। আজও গ্রাম বাংলার শতকরা ৯০ ভাগ এবং শহরের শতকরা ৬০ ভাগ লোক ভেষজ চিকিৎসা ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে। সেসব দেশে ফার্মেসিতে একটি কর্নারই থাকে প্রাকৃতিক ঔষধের জন্য।
সময়ের বিবর্তনের সাথে সাথে এসব ভেষজ উদ্ভিদের অনেকগুলোই লোকজ বা আঞ্চলিক-ভাবে (folkloric reputation) স্বীকৃতি পেয়েছে। ডায়াবেটিকস নিরাময়ে ভেষজ পদ্ধতি চিকিৎসার গুরুত্ব রয়েছে। এবং ভেষজ চিকিৎসার সাহায্যে ডায়াবেটিকস নিয়ন্ত্রণ করা যায়।

তুলসি
 পাতার অনেক গুন। অনেক এ তুলসি গাছ বাড়ির উঠানে ও লাগায়। খুব কাশি হলে তুলসিপাতার রস খুব এ কার্যকারী। এবার আসি ডায়াবেটিকস প্রসঙ্গে গবেষণাই দেখা গেছে যে তুলসি পাতা বিবিধ-ভাবে ডায়াবেটিকস নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে।

পাতার ৮০% অ্যালকোহল নির্যাস খাবারের সাথে এবং তুলসি পাতার গুড়া পানিতে মিশিয়ে খাবার আগে খেতে হবে। এটি অগ্ন্যাশয়ের বিটা কোষ থেকে ইনসুলিন নিঃসরণের মাত্রা বৃদ্ধি করে। এটি কোষের ভিতরে শকরা প্রবেশ মাত্রা বাড়ায়।
খাদ্যনালী থেকে শর্করার শোষণ বিলম্বিত করে। ইন্সুলিনের সংবেদনশীলতা বাড়ায়। যা ডায়াবেটিকস নিয়ন্ত্রণ করে এবং ডায়াবেটিকস রোগীরা উপকৃত হয়।



বহুমূত্র রোগে ইসপগুল


বহুমূত্র রোগে ইসপগুল
(আজকের ২৪) ইসপগুল আঁশযুক্ত খাবার হওয়ায় বহুমূত্র রোগীদের জন্য এটি উপকারী হিসেবে বিবেচিত।
প্রচলিত নাম: ইসপগুল
ইংরেজি নাম: Wooly Plantain
ব্যবহার পদ্ধতি:
গরম পানিতে ইসপগুলের ভূষি ভিজিয়ে রেখে ৩ বেলা খাবারের সাথে খেতে হবে। খাদ্য আঁশ সমৃদ্ধ হওয়ায় ইসপগুলে ধরন-১ এবং ধরন-২ দুই ধরণের বহুমূত্র রোগীরা উপকৃত হতে পারেন।



No comments:

Post a Comment